অত্যন্ত দুঃখ ও ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আজ আমাদের বড় ভাইদের বিদায় জানাতে হল। যদিও আমরা মনে করি এটা একটা বিদায় অনুষ্ঠান মাত্র। কারণ মন থেকে চিরতরে চলে যাওয়া হয়তো সম্ভব নয়। রিদয় রাঙ্গানো গাঁথা সুরের এই কলেজে আমরা দীর্ঘদিন ধরে আছি। এখানে আমরা সবাই ভাইয়ের মতো ছিলাম। আপনি আমাদের কাছে বড় ভাইয়ের মতো ছিলেন। আমরা আপনাকে অনুসরণ করেছি। আমরা আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি।এই বিদ্যালয় থেকে তোমাদের শারীরিক বিদায় হলেও বিদ্যালয়ের আঙিনা থেকে তোমাদের স্মরণ কখনো দূর যাবে না। এই জীবনের খেলাঘরে এই বিদায় যতটা দুঃখের ঠিক ততটাই আনন্দের রিজন জীবনের অমৃত সম্ভাবনা দেখে তোমরা এগিয়ে যাবে, মুঠো মুঠো কুড়িয়ে নেবে জীবনের সাফল্য সুধা। জীবনের নানা এক্সপেরিয়েন্স তোমাদের জীবনকে বৈচিত্র্যময় করবেন। এইজন্য বলি এগিয়ে যেতে হলে মাঝে মাঝে ছেড়ে যেতে হয়, কাটাতে হয় মায়ার ইন্দ্রজাল।
তাই হযরত আলী রাঃ একটা বিখ্যাত কথন সবসময় মনে রাখবে, জীবন হোক কর্মময়, ক্রমাগত ছুটে চলা, ঘুমানোর জন্য পরেই রয়েছে। তোমাদের জীবনকে এইরকম ভাবে তোমরা সাজাবে যেন তোমাদের প্রত্যেকটি খুশি তোমরাও উপভোগ করতে পারো। আলসেমি করে কেউ কোনো সময়েই সুবিশাল কিছু হতে পারেনি।যারা নিজের কম্ফর্টজন ভেঙে খাটনি করেছে তারাই স্পর্শ করেছে সাফল্য চোড়া। তারাই অর্জন করেছে ইজ্জত ও খ্যাতি। কখনও বলবে না আমার তো মেধা নেই, আমি তো ব্রিলিয়ান্ট নই, মেধার চেয়েও তাৎপর্যপূর্ণ হচ্ছে পরিশ্রম।তুমি যত জানবে, যত পড়বে, যত এক্সপেরিয়েন্স অর্জন করবে তোমার এগিয়ে মনস্কাম কেউ রোধ করতে পারবে না। বিগত কয়েক বছর ধরে তোমাদের সবাইকে আমাদের অকৃত্রিম ও ভালোবাসা অর্পণ করেছি। প্রয়োজনে জটিল আচরণ করেছি যাতে তোমরা নিজেদের পড়াশোনা নিয়ে সিরিয়াস হও। যেন পরীক্ষায় বেশ ভালো সাকসেস অর্জন করার জন্য পারো।
দীর্ঘদিন ধরে আমরা এই প্রতিষ্ঠানে পড়েছি এবং এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি শিক্ষক শিক্ষিকাবৃন্দ আমাদেরকে বিভিন্ন বিষয় অত্যান্ত দক্ষতার সাথে পড়িয়েছেন তা আমরা কখনোই ভুলবো না। এজন্য আমরা আপনাদের কাছে চিরকৃতজ্ঞ। কিন্তু ইচ্ছে না থাকা সত্ত্বেও আমাদেরকে আজ অত্র প্রতিষ্ঠান থেকে বিদায় নিতে হচ্ছে। আজ শিক্ষাজীবনের একটি অধ্যায় সমাপ্ত করে পরের আরেকটি অধ্যায়ে পা রাখার উদ্দেশ্যে আমরা বিদায় নিচ্ছি। আপনারা আমাদের জন্য দোয়া করবেন যেন ভবিষ্যতে শিক্ষাজীবনে আরো উন্নতি করে দেশ ও জাতি গঠনে ভূমিকা রাখতে পারি। এছাড়া এখানে দীর্ঘ শিক্ষাজীবনে আপনাদের অনেক শাসন-বাড়নের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে যা সাময়িক বিরক্তিকর মনে হলেও এখন এই শেষ মুহূর্তে বুঝতে পারছি এটা আমাদের জন্য কতটা দরকারি ছিলো। তাই আমাদের কোনো আচরণের যদি কোনো শিক্ষক/শিক্ষিকা কষ্ট পেতে থাকেন বা ছোট কিংবা বড় কোনো ভুল করে থাকি তাহলে আমাদেরকে ক্ষমা করবেন। সমস্ত ছাত্র-ছাত্রীদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।জাতি আজ প্রত্যাশা করে দুঃখ, দারিদ্র আধার ঘুছিয়ে তোমরা গড়ে তুলবে একটি পুষ্ট বাংলাদেশ। হে বন্ধুরা, প্রত্যেক মানুষের অবশ্য উচিত হলো শিক্ষা গ্রহণ করা। ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য মানুষের অবশ্য উচিত হলো শিক্ষা গ্রহণ করা। জন্ম থেকে মরণ পর্যন্ত জ্ঞান অর্জন করার জন্য হয়। অর্জিত জ্ঞানী প্রকৃতপক্ষে কারের জ্ঞান। পুস্তক সহায়ক শক্তিমাত্র। বিদ্যালয়ে আসে সবাই, আবার চলে যাবে সবাই। জীবনের এই নব দিগন্তরের উদ্দেশ্য তোমাদের এই অভিযাত্রা তোমাদের সামনে সোনালী দিন বয়ে আনুক।